" আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি " -

" আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি " - 
" আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি " - দয়া করে আমার প্রাণের স্পন্দন নিয়ে গবেষণা করবেন না। অন্য ভাবে গাওয়ার চেষ্টা করবেন না। সে বিদেশের শিল্পী হোক আর দেশের শিল্পী হোক। এর মূল সুরটা নষ্ট করবেন না। সে নচিকেতা হোক বা বিশ্বের সেরা শিল্পী হোক আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি। আমার প্রাণের গান নিয়ে নড়াচড়া করবেন না।
==========
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গানটি রচিত হয়েছিল। গানটির কোন পান্ডুলিপি পাওয়া যায় নাই - এর জন্য সঠিক রচনাকাল জানা সম্ভব হয় নাই। সত্যেন রায়ের রচনা থেকে তথ্য জানা যায় যে, ৭ আগস্ট ১৯০৫ সালে কলকাতার টাউন হলে একটি প্রতিবাদ সভায় এই গানটি প্রথম গাওয়া হয়। ১৯০৫ সালে ৭ সেপ্টেম্বর ( বাংলার ২২ ভাদ্র , ১৩১২ সাল) রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষরে "সঞ্জীবনী" পত্রিকায় গানটি প্রকাশিত হয়। এই বছর বঙ্গদর্শন পত্রিকার আশ্বিন সংখ্যাতেও গানটি প্রকাশিত হয়েছিল।
==============
যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত -
----------------------
১৯৭১ সালের ১ মার্চ গঠিত হয় স্বাধীন বাংলার কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ। পরে ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে অণুষ্ঠিত জনসভা শেষে ঘোষিত ইশতেহারে এই গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭১ এপ্রিল ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ অণুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গাওয়া হয়। এবং ১২ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে পঁচিশ লাইনের এ গানটির প্রথম দশ লাইন সদ্যগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয়সঙ্গীত হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়।।
=============
" আমার সোনার বাংলা " সম্পূর্ণ গানটি


-----------------------
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি ॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে--
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি ॥
কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো--
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে--
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি ॥
তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে--
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি ॥
ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে--
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি ॥
ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে--
দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে--
আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব'লে গলার ফাঁসি ॥
------------------------
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৩১২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৯০৫

Comments

Popular posts from this blog

রুদ্রাক্ষ - এক দুর্লভ বস্তু।

ধর্মের নামে ভন্ডামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে