কি ভাবে যশোর রোডের গাছ হত্যা করতে হবে না আবার সড়ক সম্প্রসারণও করা যাবে। আছে নানা উপায় -


কি ভাবে যশোর রোডের গাছ হত্যা বন্ধে করতে পারি ?
আছে নানা উপায় -
==========
ঐতিহাসিক কোন কিছুর মূল্য অর্থ দিয়ে নির্ণয় করা সম্ভব না। যেমন সম্ভব না ঐতিহাসিক যশোর রোড ও এর প্রাচীন বৃক্ষগুলোর মূল্য নিদ্ধারন করা। বাংলাদেশ - ভারত- বাণিজ্যের প্রয়োজনে রাস্তা সম্প্রসারণ জরুরি। যা সময়ের দাবি। তবে কি প্রাচীন বৃক্ষ গুলো রক্ষা করা সম্ভব না? তবে কি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ থাকবে? তাহলে বিকল্প উপায় কি? কোন বিকল্প আছে কি??
----------
গাছ হত্যা বন্ধে আমরা কি করতে পারি -
(১) গাছগুলি না কেটে রোড ডিভাইডার হিসাবে ব্যবহার করে রাস্তা চওড়া করা যেতে পারে।
(২) বর্তমান বাংলাদেশের খুলনা থেকে ভারত পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চালু আছে। ওই রেলপথে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী রেলগাড়ির পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে। এবং এটা করলে একদিকে যশোহর রোডে যানবাহনের চাপ কমবে অন্যদিকে গাড়ি চলাচল কম হলে বাতাসে বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) নির্গত কম হবে। যা পরিবেশের জন্য ভালো হবে। সারা বিশ্বে রেল একটি নিরাপদ ও জনপ্রিয় বাহন।
(৩) বর্তমানে পৃথিবীর অনেক দেশে প্রযুক্তির মাধ্যমে গাছ প্রতিস্থাপিত করা হচ্ছে (Tree Replacement)। আমরা ইচ্ছে করলে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি। ভারতেই অহরহ হচ্ছে যেমন গুজরাট, হায়দরাবাদে।
(৪) যশোর রোডকে ঐতিহ্যবাহী স্থান (Heritage Sites) হিসেবে ঘোষণা দেয়া। যা থেকে যাবে যুগযুগান্তর। এতে এই এলাকায় পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে। একদিকে এই এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে তেমনি ভাবে পরিবেশ দূষণ কমবে। পৃথিবীতে এমন উদাহরণ অনেক আছে প্রাচীন জনপদ, সড়ক, বন জঙ্গলকে ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো। কয়েকটি Heritage Road - স্নেক রোড, স্লিক রোড, আর্কাদিয়া রোড, মাউন্ট প্লেয়াসান্ট রোড, মান্দায় রোড, সাউথ বুনা ভিস্তা রোড, লিম চু কং রোড ইত্যাদি। অভিজ্ঞতার জন্য চীন, সিঙ্গাপুর, অস্টেলিয়া এমন অনেক দেশ আছে পর্যবেক্ষণ করে আসতে পারে।
(৫) বর্তমান যশোর রোডে অনেক বিপদজনক বাঁক আছে। যদি নতুন সড়ক তৈরি করা যায় তবে সড়কের এলাইনমেন্ট সোজা রাখা যাবে। এতে সড়কের দৈঘ্য কমে আসবে। বাঁচবে সময়। রাস্তা সোজা হবার কারণে বাঁকের পরিমাণ কমে আসবে এবং সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ কমে আসবে। এই সড়কে টোল আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। অনেক লোকের কর্ম স্থান সৃষ্টি হবে।
(৬) এমন বিকল্প হাজারো উপায় বের করা সম্ভব হবে যদি ইচ্ছে থাকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যারা এইসব বিকল্পগুলি নিয়ে চিন্তা করবেন তাঁরা এটা কতটা চিন্তা করছে - তা ভাবনার বিষয়? আমাদের জনগণকে কেন শুধুমাত্র বিকল্প ভাবতে হবে? সব বিষয়ে কেন জনগণকে প্রতিবাদ করতে হবে?? সরকারি পরিকল্পনা দপ্তরগুলি যখন কোনও পরিকল্পনা করেন, তাঁদের ভাবনায় ইতিহাস ঐতিহ্য, পরিবেশ ভাবনাটি কেন থাকে না? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনসাধারণের মতামত গ্রহণ করা কাম্য। সেই হিসাবে একটি জনশুনানির ব্যবস্থা‍ করা যেতে পারত। তাহলেও অন্তত সাধারণ মানুষকে, ‘দুই হাজার গাছের সবগুলি কেন? কিছু গাছও রক্ষা কি করা সম্ভব নয়? ইত্যাদি হাজার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে মাথা কুটে মরতে হত না।
=======
সর্ব শেষ - "একটি গাছ একটি প্রাণ, সবুজ পৃথিবী সুন্দর পৃথিবী"। ঐতিহাসিক যশোর রোডের বৃক্ষ হত্যা বন্ধ করা হোক যে কোন উপায়ে। হোক প্রতিবাদ।
ছবি- ভারতে যশোহর রোডের গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ভারতে এই গাছ কাটা নিয়ে আদালতে একটি মামলা হয়। এবং আদালত একটি রায় দেয় গাছ কাটা যাবে না।

Comments

Popular posts from this blog

" আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি " -

ধর্মের নামে ভন্ডামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে

রুদ্রাক্ষ - এক দুর্লভ বস্তু।